
স্টাফ রিপোর্টার / চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি:
অনুমতি নেই তবুও দিন কিংবা রাতের আঁধারে প্রকাশ্যেই চুয়াডাঙ্গায় সম্পূর্ণ অবৈধভাবে সিএনজি-মাইক্রোবাসে ব্যবহৃত গ্যাস খোলাবাজারে বাসা-বাড়ির সিলিন্ডারে বিক্রি করছে প্রায় সব ফিলিং স্টেশনগুলো। এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনতাকেই দুষছেন স্থানীয় সুশীল সমাজের প্রতিনিধি সহ সচেতন মহল।
জানাগেছে, সম্পূর্ণ আইন বহির্ভূত ও কোন রকম অনুমোদন ছাড়াই দীর্ঘদিন যাবত চুয়াডাঙ্গা জেলার ভিমরুল্লাহস্থ ইমরান ফিলিং স্টেশন, সরোজগঞ্জ বাজারের মনিরুল ফিলিং স্টেশন, আলমডাঙ্গা হক ফিলিং স্টেশন, মীর ফিলিং স্টেশন, দামুড়হুদার লোকনাথপুর মেসার্স কে এ এম ফিলিং স্টেশনে খোলা বাজারে বাসা বাড়ির গ্যাস সিলিন্ডারে এলপিজি গ্যাস বিক্রি করে আসছে।
এসকল ফিলিং স্টেশন গুলো থেকে প্রতিদিন বিকাল ও সন্ধ্যায় বাইসাইকেল, অটোরিকশা, পাখিভ্যান,মোটরসাইকেলের পিছনে সিলিন্ডার বেঁধে নিয়ে গ্যাস সংগ্রহ করছে সাধারণ ভোক্তারা। কোনো প্রকারের পরীক্ষা নিরীক্ষা ছড়ায় সিলিন্ডারে গ্যাস সরবরাহ করছে এ ফিলিং স্টেশনগুলো। সিলিন্ডার ভর্তি গ্যাস নিয়ে বিভিন্ন পরিবহনে চলাচল করছে ভোক্তা সাধারণ। সাধারণ ভোক্তারা জানেও না তারা কতটা মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে গ্যাস সিলিন্ডার পরিবহন করছেন।
চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে গড়ে ওঠা উল্লেখিত ফিলিং স্টেশনগুলো বিস্ফোরক আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মাসে প্রায় কোটি টাকার গ্যাস অবৈধভাবে বিক্রি করে আসছেন। অথচ, সে ব্যাপারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কোন রকম নজরদারী নেই বললেই চলে ?
সচেতনতা মহল ও সুচিন্তিত নাগরিকদের মতে,জেলার বেশ কয়েকটি ফিলিং স্টেশনে বিকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত সিলিন্ডারে এলপিজি গ্যাস নিতে আসা ভোক্তাদের ভিড় জমে। ফিলিং স্টেশনগুলো সে সমস্ত সিলিন্ডারগুলো কোনো প্রকার পরীক্ষা – নিরীক্ষা না করেই ভোক্তার চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ করছে অবৈধ ভাবে। এভাবে খোলাবাজারে গ্যাস সরবরাহ ও সিলিন্ডার ভর্তি গ্যাস পরিবহনের ফলে বড় ধরণের দূর্ঘটনার আশংকা রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আইনের শাসন ও জনসচেতনতায় সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গ্যাস সিলেন্ডার বিক্রেতা জানিয়েছে, জেলার একাধিক তেল পম্পগুলো আইনের তোয়াক্কা না করেই যানবাহনে ব্যবহৃত গ্যাস বাসাবাড়ি সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডারে সরবরাহ করছেন অহরহ,যা সম্পন্ন আইন পরিপন্থি ও ভোক্তা সাধারণের ঝুঁকির অন্যতম কারণ। সাধারণ ভোক্তাদের সচেতন হতে হবে। কারণ একটা সিলিন্ডার পরীক্ষা- নিরীক্ষা করেই তাতে নতুন করে গ্যাস ভর্তি করা হয়। কিন্তু ফিলিং স্টেশনগুলো কোনো রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছড়ায় সিলিন্ডার ভর্তি করে দিচ্ছে। যদি কোনো ভাবে সিলিন্ডার বিকল হয় তাহলে দুর্ঘটনার শঙ্কা রয়েছে। এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন।
বিষয়টি নিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা তেল পাম্প মালিক সমিতির সভাপতি মো হাবিল হোসেন জোয়ার্দারের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমরা যারা খোলা বাজারে সিলিন্ডারে গ্যাস বিক্রি করছি এটা সম্পূর্ণ অবৈধ ও আইন পরিপন্থি। আমরাও চাই না অবৈধ ভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে। সে জন্য বিষয়টি নিয়ে আমরা তেল পাম্প মালিক পক্ষ জেলার উর্ধতন কতৃপক্ষের সাথে বসেছিলাম। সমস্যাটা নিয়ে জেলার উর্ধতন কতৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। তিনারা আমাদের কে বিষয়টি নিয়ে উপর মহলে যোগাযোগ করতে বলেছেন। উপরমহলে তো আমাদের পক্ষ থেকে স্থানীয় ভাবে যোগাযোগ করা সম্ভব না। কারণ সমস্যা টা জাতীয়ভাবে সারাদেশে। তাই আমরা মনে করি সমস্যা টা নিয়ে বিভিন্ন গ্যাস কোম্পানিকে উপর মহলে কথা বলা উচিত।
এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চুয়াডাঙ্গা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সজল আহম্মেদ জানিয়েছেন, তেলপাম্পগুলো কোন ভাবেই সিলিন্ডারে খোলা বাজারে গ্যাস বিক্রি করতে পারে না। খোলা বাজারে গ্যাস বিক্রি সম্পূর্ণ অবৈধ। সু-নিদ্রিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই কঠোর আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সেই সাথে ভোক্তা সাধারণকেও সচেতন হতে হবে।